গত ২০ই সেপ্টেম্বর রোজ শনিবার দারুসসুন্নাত মডেল মাদ্রাসার হিফযুল কুরআন বিভাগের ০৭ জন হিফজ, ০৪ জন নাজেরা ও ০৩ জন আমপাড়া এর সবক প্রদান অনুষ্ঠান স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও হিফয বিভাগের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিল।

প্রধান হাফেজ হাফেজ মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম এর পরিচালনায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে কুরআন তিলাওয়াত করেন হিফয বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম সানি, ইসলামি সংগীত পরিবেশ করেন দারুসসুন্নাত শিল্পগোষ্ঠীর সদস্যরা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ, শিক্ষা সচিব জনাব মাওলানা মোঃ জাফরুল ইসলাম, আরবী প্রভাষক মুফতি যোবায়ের মাহমুদ, আরবী প্রভাষক মুফতি মাওলানা ইউসুফ আল আসলামী। 

ছাত্র ও অভিভাবকদের নসিহতমুলক আলোচনা পেশ করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বপ্নদ্রষ্টা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোহাম্মদ ফয়জুল আলম, অধ্যক্ষ মজমের হাট ফাযিল মাদ্রাসা ও সভাপতি, দারুসসুন্নাত মডেল মাদ্রাসা।

অনুষ্ঠানে ছাত্রদের সবক প্রদান ও দোয়া মুনাজাত করেন উস্তাযুল আসাতেজা হাফেজ মাওলানা কামালউদ্দীন সাহেব। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে অধ্যক্ষ মাওলানা আরিফ বিল্লাহ বলেন, দারুসসুন্নাত মডেল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পিছনে সবচেয়ে বড় একটা লক্ষ্য হচ্ছে এই মাদ্রাসাটি পরিপূর্ণ সুন্নতের উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকবে, তিনি উদ্ধৃতি টেনে বলেন, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রায়শই বলতেন আমার সন্তান চারটি। আমার নিজের তিন সন্তান আরেকটি দারুসসুন্নাত মডেল মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসায় যে সকল ছাত্ররা পড়ে সবাই আমার সন্তানতুল্য । আমি নিজে হজের সফরে হুজুরকে দেখেছি। হুযুর প্রতিটি দোয়া কবুলের জায়গায় মাদ্রাসার জন্য, মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য, বিশেষ করে হিফয বিভাগের ছাত্রদের জন্য। মাদ্রাসার শিক্ষক, অভিভাবক সবার জন্য দোয়া করছেন। হুযুরের চোখের পানির বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা মাদ্রাসাটি কবুল করে নিয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। 

অধ্যক্ষ মহোদয় আরো বলেন - দারুসসুন্নাত মডেল মাদ্রাসার অন্যান্য শাখায় ভিন্ন দায়িত্বশীল থাকলেও হিফয বিভাগ সরাসরি হুযুরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন - দারুসসুন্নাত মডেল মাদ্রাসা আপনাদেরই প্রতিষ্ঠান, এর ভালোমন্দের আপনারাই ভাগীদার তাই আপনারা আমাদের পরামর্শ দিবেন। কোন সমস্যা পেলে আমাদের জানাবেন। আমরা বারংবারের মতো আপনাদের উপদেশ ও পরামর্শ আমলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবো ইনশাআল্লাহ। 

আলোচনায় মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ফয়জুল আলম বলেন, দারুসসুন্নাত মডেল মাদ্রাসা শুধু যে রেজাল্ট করবে, ভালো ফলাফল বয়ে আনবে তার জন্য তৈরি করা হয়নি। এইগুলো তো থাকবেই এর পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠান এর দ্বারা অবশ্যই ছাত্ররা আমল আকিদা আখলাক সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে। আমি বিশ্বাস করি এই ছাত্ররাই আমার নাজাতের উসিলা হবে। প্রতিষ্ঠানে যারা খেদমত করে তাদের নাজাতের উছিলা হবে। হুযুর আলোচনায় মাদ্রাসার সামনে নির্মানাধীন নতুন ভবনের সুসংবাদ সবাইকে জানিয়ে তিনি অভিভাবকদের বলেন, ইনশাআল্লাহ মাদ্রাসার যে আবাসন ও রুমের সমস্যা যার কারনে আমাদের ইচ্ছা থাকা সত্বেও নুরানী বিভাগ ও হিফয বিভাগে আমাদের সীমিত ভর্তি কার্যক্রম করতে হচ্ছে তা অতি দ্রুত সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ। সবাই দোয়া করবেন।

সবক প্রদান শেষে দোয়ার প্রারম্ভে উস্তায হাফেজ কামালউদ্দীন সাহেব বলেন - আমি অনেক মাদ্রাসায় যাই সবক প্রদান করি, কিন্তু এই মাদ্রাসার ছাত্রদের ইয়াদ ও পড়ার মান অনেক ভালো। আমি আশা করি এই জায়গার ছাত্ররা ভোলা জেলা সহ দেশের যেকোন জায়গার যেকোন প্রতিযোগীতা থেকে পুরস্কার ছিনিয়ে আনতে পারবে ইনশাআল্লাহ। 

অনুষ্ঠানে প্রধান হাফেজ হাফেজ মুহাম্মদ মুজাহিদ বলেন, অত্র মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এ যাবৎ ১২জন ছাত্র একদম কায়েদা থেকে শুরু করে কুরআন শরীফ হিফজ সমাপ্ত করেছে, আমি আশা করছি আপনারা আগামী বছর আরো চমক দেখবেন ইনশাআল্লাহ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে সুনাম সুখ্যাতির সাথে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে চলতে পারে।